কলাপাড়া হাসপাতাল; তদন্ত কমিটি করেই কি দায়িত্ব শেষ? | আপন নিউজ

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন

প্রধান সংবাদ
কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিতি হবে আগামী ৫জুন গলাচিপায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুরগী ব্যবসায়ীকে মা’রধ’র গলাচিপায় অপার সম্ভাবনাময় সু-স্বাদু মুগডাল যাচ্ছে জাপানে গলাচিপায় ঝিলিক সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালকের সংবাদ সম্মেলন রাঙ্গাবালীতে ভয়ংকর ‘টর্পেডো’ খালে ভেসে আসায় জনমনে আতঙ্ক এক পায়ে লাঠি ভর করে প্রথম ভোট দিতে পেরে খুশি শারীরিক প্রতিবন্ধী আখিনুর আমতলীতে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে একজনের এক মাসের দন্ড কলাপাড়ায় বর্নাঢ্য আয়োজনে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালিত আমতলী সদর ইউপি নির্বাচনে শেষ সময়ে প্রচারনায় ব্যস্ত প্রার্থীরা; জরিপে এগিয়ে মোতাহার আমতলী একে স্কুল মহাসড়ক থেকে ৪৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
কলাপাড়া হাসপাতাল; তদন্ত কমিটি করেই কি দায়িত্ব শেষ?

কলাপাড়া হাসপাতাল; তদন্ত কমিটি করেই কি দায়িত্ব শেষ?

এস এম আলমগীর হোসেনঃ
তদন্ত কমিটি করেই কি দায়িত্ব শেষ?
কলাপাড়া হাসপাতাল, যে কোন ডাক্তার নার্স ও স্টাফদের অনিয়ম-দুর্নীতি অবহেলা গাফিলতি যেকোনো বিষয়ে গণমাধ্যমে আসলেই হয় তদন্ত কমিটি। আর তদন্ত কমিটি পরবর্তীতে কি কি করা হয়েছে তা জানা  হয়না কেউই।
তাহলে কেন এ কমিটি এবং কাদের জন্য এ কমিটি?
এমন প্রশ্ন বার বার রয়ে যায় সাধারণ মানুষের মাঝে।
ডাক্তার নার্স ও স্টাফদের অনিয়ম-দুর্নীতি অবহেলা গাফিলতি যেকোনো বিষয়ে গণমাধ্যমে আসলেই হয়  তদন্ত কমিটি আর তদন্ত কমিটি করে যেন দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় স্বাস্থ্য প্রশাসকের।
উপকূলের কলাপাড়া উপজেলায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এখানে জেলে, কৃষক, শ্রমিক সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ বসবাস করে থাকেন।
আর এসব সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা  কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সাধারন মানুষ দূরদূরান্ত থেকে ফ্রি-চিকিৎসা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা যেন পায় তার জন্য ছুটি আসে এ হাসপাতালে। অথচ এসব খেটে খাওয়া মানুষগুলো প্রতারণায় শিকার হয় প্রতিনিত। যেমন হাসপাতাল গেট থেকে ঢুকতেই বিভিন্ন ক্লিনিক-ল্যাবের দালালদের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয় যায় রোগীরা।
কারণ দালালদের খপ্পরে পড়ে বানিজ্যখানা  ক্লিনিক-ল্যাবে নিয়ে গিয়ে প্রাইভেট ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করানো হয়। আর ওইসব ডাক্তার তাদের রোগের জন্য বিভিন্ন অযৌক্তিক  পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে থাকে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা মানে টাকা আর টাকা আর ডাক্তারের  ভিজিট রয়েছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।
অনেক সময় দেখা যায় রোগীর যেই পরিমাণ টাকা নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসে তার চেয়ে দ্বিগুণ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় চলে যায় তার জন্য রোগীদের নাকের জিনিস, মোবাইল সেট বন্ধক ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে চিকিৎসা করাতে হয়।
এতক্ষণ বললাম বাণিজ্য খানার কথা এখন আসি হাসপাতলে ভিতরে যা হয়, ২-রোগী হাসপাতালে ঢুকে সরকারি ডাক্তার দেখাতে প্রথমে তাদের করতে হয় ৩ টাকা বদলে ৫ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ডাক্তারের চেম্বারে যেতে হয়। আর ডাক্তারের চেম্বারে গেলে টিকিট হাতে নিয়ে সিরিয়ালে থাকতে হয়। সিরিয়াল শেষে ডাক্তার টিকিট নিয়ে টিকিটের উপরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালে থাকা সত্ত্বেও বাহিরের ডাক্তারের নির্দিষ্ট ক্লিলিক অথবা ল্যাবে পাঠিয়ে দেয় ক্লিলিক-ল্যাবের ভিজিডি কার্ড নিয়ে।
রোগী যদি ভুল করে অন্য ল্যাবে পরীক্ষাগুলো করে থাকলে ওই পরীক্ষাগুলো ওই ডাক্তারের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হয় না এবং অন্য ল্যাবে পরীক্ষার করার জন্য রোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকে এমন অভিযোগও রয়েছে।
এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হয়, কিন্তু কোন প্রতিকার নেই।
পরীক্ষা করে যখন ডাক্তারের কাছে যায় যখন ডাক্তার বিভিন্ন ওষুধ লেখা শেষ হয়না, এনিয়ে অনেকবার ফেসবুকে পোস্ট করে প্রতিবাদ জানায় রোগীর আত্মীয়-স্বজন।
৩-হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানিদের প্রতিনিধিদের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাটানি। ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নিয়ে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র হাত থেকে নিয়ে কি ঔষুধ লেখছে তা ছবি তুলছে, কেউ দেখছে কাড়াকাড়িতে অতিষ্ঠ হয় রোগীরা।
৪- হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যেসব রোগীরা আসে তাদের চিকিৎসা হয় টাকার উপরে।
 যে যত বেশি টাকা দেয় তার  তত বেশি সেবা পাবে, আর টাকা যদি না থাকে তাহলে রোগীদের পটুয়াখালী-বরিশাল নেওয়া লাগবে বলে দেয়।
৫- হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের একমাত্র ভরসা আল্লাহ, কারণ ডাক্তারের ভর্তি পর্যন্তই যেন দায়িত্ব শেষ তারপর পায়ে ধরলেও আনা যায় না।  কয়েকদিন আগে আমরা অনলাইন ও সংবাদপত্রের পাতায় দেখেছি যে, উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের এক সন্তান তার বাবার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পায়ে ধরে, বাবার চিকিৎসার জন্য তবুও ডাক্তার আসেনি। অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তার বাবা। ডাক্তার বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
এই নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করার পর হয় অভিযুক্ত ডাক্তারকে কারণ দর্শাও নোটিশ ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, তদন্ত কমিটি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে আর ওই কমিটি আলো দেখে নি।
হাসপাতালের নার্সদের সেবা চলে টাকার উপর যে যত টাকা দেবে, তত সেবা পাবে।  রাত ১ টার পর নার্সদের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। রোগীরা দরজা ভেঙ্গে ফেলেও তারপরও তারা ঘুম থেকে জাগে না এমন অভিযোগও রয়েছে নার্সদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের পাহাড় ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে।
তারপরও টনক নড়ছে না স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য বিভাগের।
বিগত দিনে দেখেছি এত অনিয়ম-দুর্নীতি বিরুদ্ধে সংবাদপত্রে লেখালেখি, গণশুনানি, মানববন্ধন কর্মসূচি করলেও কোন সুফল পাচ্ছে না এই অঞ্চলের রোগীরা।
আমরা যদি এভাবে যদি অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখি তাহলে রাত পার হয়ে যাবে লেখা পার হবে না। তার জন্য লেখা সীমিত রাখলাম। এতে আপনারা বুঝে নেবে যে কত অনিয়ম দুর্নীতি এবং দুর্ব্যবহার হয় রোগীদের সাথে হয়।
বিগত দিনে কলাপাড়া হাসপাতালে ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর ভুল চিকিৎসা ও ভুল চিকিৎসায় রোগীদের নানা সমস্যা বা মারা গেলে তার অনলাইন ও সংবাদপত্রে লেখালেখির পর স্বাস্থ্য প্রশাসক তদন্ত কমিটি কমিটি করেন।
আরে কমিটি গঠন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে আলোর মুখ দেখে না।
আমি এক অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে নয় সাধারন মানুষ হিসেবে বলবো কলাপাড়া হাসপাতাল সরকারি হাসপাতাল, এ হাসপাতালে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে স্বাস্থ্য সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
অথচ আমরা কি দেখি দোরগোড়ায় তো দূরের কথাহাসপাতলে এসেও সেবা পায় না সাধারণ রোগীরা এককথায় বাণিজ্য খানা খুলে বসেছে কতিপয় ডাক্তাররা।
এসব অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র এবং প্রশাসন হাসপাতাল পরিদর্শন করে বিভিন্ন হুঁশিয়ারি এবং পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়না ।
শুক্রবার (৭ফেব্রুয়ারি) কলাপাড়া হাসপাতালে নিপা হাওলাদার (২২) নামে এক গর্ভবতী নারীকে পানির পরিবর্তে এসিড খাওয়ানোর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে।
এ ঘটনায় হাসপাতালের ডা: জে এইচ খান  লেলীন কে প্রধান করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন ডা: অনুপ কুমার সরকার, ডা: সাইমুন সুলতানা শান্তা, ডা: মাহমুদুল রহমান মিতুল, সেবিকা কল্পনা বিশ্বাস ও প্রধান অফিস সহকারি মো.মনোয়ার হোসেন।
আহত নিপা হাওলাদারকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে উন্নত জন্য চিকিৎসার ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেয়া হয় বলে জানা গেছে। দুপুরে হাসপাতালে ভায়া টেষ্ট কক্ষে এমন ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল সেবিকাদের গাফেলতির কারনে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগীর স্বজনরা দাবী করেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সালমা বেগমের সাথে দুইদিন ধরে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও সে ফোন রিসিভ করছে না তার জন্য তার বক্তব্য আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারলাম না।
কলাপাড়া হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: চিন্ময় হাওলাদার জানান, আসলে আমরা কেউ শাস্তি দিতে চাই না।
কমিটি করে তাদেরকে সতর্ক করা হয়, সতর্ক না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
##
লেখক:
সম্পাদক
আপন নিউজ বিডি ডটকম ও কলাপাড়া প্রতিনিধি দৈনিক আমাদের কন্ঠ, দৈনিক সরেজমিন বার্তা।

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2022 © aponnewsbd.com

Design By JPHostBD
error: সাইটের কোন তথ্য কপি করা নিষেধ!!